এসে গেছে বাংলার ঋতুরাজ বসন্ত।

নিউজ ডেস্ক।।
.
নব যৌবনের বার্তা বহনকারী ঋতুরাজ বসন্ত এসে গেছে। বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। রিক্ত শীতের পরেই ঋতুরাজ বসন্তের রাজকীয় আবির্ভাব।
ষড়ঋতুর এই দেশের গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত ও শীতের শেষে নব যৌবনের বার্তাবহন করে নিয়ে আসে মধুমাস বসন্ত। শীতপ আড়ষ্ট প্রকৃতি যেন বর্ণাঢ্য বরণমালা নিয়ে স্বাগত জানায় বসন্তকে।
আজি দক্ষিণা দুয়ার খোলা
“এসো হে এসো হে, আমার বসন্ত এসো”। হেমন্ত আর শীতের পরে যাদুর স্পর্শ নিয়ে আসে বসন্ত। কনকনে শীত তখন পালিয়ে যায়। গ্রীষ্মের প্রখরতা নেই, বর্ষার কলো মেঘ নেই, শরৎ হেমন্তের সুন্দর ভুবনের তুলনায় বসন্ত তুমি বিজয়ী।
বসন্ত এসেছে তাই গাছ গাছে সবুজ পাতার সমারোহ। বাতাবী লেবুর ফুল আর আম্র মুকুলের গন্ধ বাহী পাগলপারা বাতাস, মৌমাছির গুঞ্জন, কবির মনে জাগে ছন্দ আর গায়কের মনে জাগে গান, কোকিলের কুহু কুহু রব প্রকৃতিকে ডাক দেয় অফুরন্ত আনন্দের প্রাণ প্রাচুর্যে।
তাইতো মনের আনন্দে কবির কবিতায় –
ফুলের বনে ফুল ফুটেছে
কোকিল গাহে তায়
কিরণ কোলে লহর দোলে
সলিল বয়ে যায়।”
শীতের ধূসর প্রকৃতি একটি নতুন দিনের আশায় যে পোষাক দিচ্ছে তা স্পষ্ট ধরা পড়ে। আম জাম কাঁঠালের বনে মুকুলের ঘ্রাণ, মৌ, মৌ, মৌমাছি বেকুল হয়ে বনে বনে ছুটে বেড়ায় হরেকরকম মধুর সন্ধানে। প্রকৃতির এই ঐশ্বর্য ঋতুরাজ বসন্তেরই দান। মানুষের জীবনেও সেই নতুন পাতার আহবান নতুন দুয়ার খুলে দেয়। কোথায় যেন নিয়ে যায় মোহন বাঁশির সুরে। শিমুল, পলাশ, কৃষ্ণচুড়া, বাংলার পথে ঘাটে প্রান্তরে শোভা বর্ধন করে। দুর বন বনান্ত রক্তিম আাভাস ছড়িয়ে জীবন সংগ্রামের কথা স্বরন করিয়ে দেয়। জীবন মানেই তো যুদ্ধ। প্রতি ক্ষণে ক্ষণে আমরা শিমুল পলাশের রক্তিম পাতায় ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করি। তাঁদের স্মৃতি আমাদের এগিয়ে নেয় প্রতিটি নতুন দিনে। তারা জীবন দিয়ে আমাদের জীবনে দিয়ে গেছে এই বসন্ত। তাই তাদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা। তবে শেষ কোনো দিনও শেষ নয়। সূচনা হয় নতুন দিনের। ঋতুরাজ বসন্ত তার বিপুল সৌন্দর্য, তার স্বভাব এবং প্রাণ প্রাচুর্যের মধ্যেও বেদনার রেশ রেঁখে সূচনা করে যায় নতুন দিনের। আসে নববর্ষ। বসন্ত তাই রাজ মহিমায় মহিমান্বিত। ঋতুরাজ বসন্ত সবার মনকে গড়ে তোলে ছন্দময় সুন্দর ও সুখময়।